বাংলাদেশের বিষধর সাপসমূহ
বাংলাদেশে শতাধিক প্রজাতির সাপের দেখা মিলে। এই সাপদের বেশিরভাগের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয়না কারণ তাদের বিষ নেই। তবে কিছু সাপ আছে যাদের কামড়ে মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ থাকে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৩ প্রজাতির গোখরো, ২ প্রজাতির ঢোড়া, ৪ প্রজাতির বোরা (ভাইপার/Viper), ৩/৪ প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ, ২/১ প্রজাতির কোরাল সাপ এবং পাতি কেউটেসহ ৪ প্রজাতির কেউটে আছে, যা বিষধর। কালাচ সাপ ও একটি মারাত্মক বিষধর সাপ।
কালাচ সাপ এর সাধারণ পরিচিতি
কালাচ সাপ এর আরেক নাম কালচিতি বা ডোমনা চিতি | ইংরেজিতে বলে Common Krait. অন্যতম সুন্দর সাপেদের একটি এটি | সাপ শব্দটি শুনলে কে না ভয় পায়। শব্দটা শোনার সাথে সাথেই মনে হয় এই বুঝি সামনেই একটা সাপ ফণা তুলে দাঁড়িয়ে হিসহিস করছে। সব সাপ কিন্তু আবার ফণা তুলতে পারে না। এমনই এক সাপ হল কালাচ সাপ বা কালচিতি সাপ।
আরোও পড়ুনঃ মারাত্নক বিষধর সাপ রাসেল’স ভাইপার
কালাচ সাপ কিভাবে চিনবেন?
- কালাচ সাপের শরীরের রঙ চকচকে কালো।
- ঘাড়ের কিছুটা পর থেকে সাদা রঙের জোড়ায় জোড়ায় আংটির মত লেজ পর্যন্ত দাগ থাকে ।
- পেটের রং সাদা বা হলুদ।
- উজ্জ্বল গোলাপি বর্ণের জিহ্বা লক্ষ্য করা যায় ।
- কালাচ সাপের মাথাটা হাতের আঙ্গুলের মত আকৃতির হয়।
- মাথার পর থেকে ৩/৪ টা সাদা চিহ্ন থাকে এবং তারপর পুরো শরীরে দুটো করে সাদা রঙের দাগ থাকে।
- কালাচের ডোরা ব্রেসলেটের মত গোলাকার দাগ মাথার পরে পেটের দিকে এসে ডোরা ডাবল হয়ে যায়।
কালাচ সাপ এর বৈজ্ঞানিক শ্রেণিবিন্যাস
Kingdom: Animalia
Phylum: Chordata
Class: Reptilia
Order: Squamata
Family: Elapidae
Genus: Bungarus
Species: Bungarus caeruleus
কালাচ সাপ এর প্রাপ্তিস্থান
- বাংলাদেশের প্রায় সবজায়গায় কালাচ সাপ আছে তবে মানুষের চোখে পড়েনা কারণ এরা নিশাচর।
- এদের চলাফেরা গভীর রাতে হওয়ায় এরা সাধারণত মানুষের নজরে আসেনা।
- কালাচ সাপ এশিয়ার অন্যতম বিষধর সাপেদের একটি।
- কালাচ মূলত দক্ষিণ এশিয়া তে পাওয়া গেলেও ভারত ও বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় |
কালাচ সাপ এর স্বভাব
- কালাচ সাপ একটি নিশাচর স্বভাবের সাপ তাই এই সাপ মাঝরাতে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়।
- এই সাপ খাড়া ভাবে উপরে উঠতে পারে তাই এরা দেয়াল, খাট বা চৌকির পায়া বেয়ে বিছানার উপরে উঠে মানুষের পাশে অবস্থান করতে পারে।
- অনেকের মতে, কালাচ সাপ মানুষের শরীরের ঘামের গন্ধ নিতে বিছানায় উঠে,তাই একে ঘামচাটা সাপ ও বলা হয়।যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে সাপের ঘ্রাণ শক্তি আছে বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- ঘুমন্ত মানুষ এর পাশে যখন এরা আশ্রয় নেয় তখন ঘুমের ঘোরে মানুষ এপাশ- ওপাশ করার সময় ই এরা মানুষকে দংশন করে।
কালাচ সাপের প্রজননের সময়
- কালাচ সাপ এর প্রজনন মৌসুম মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আরোও পড়ুনঃ অত্যন্ত সুন্দর ও মারাত্নক বিষধর সামুদ্রিক সাপ ইয়েলো বেলিড সী স্নেক
কালাচ সাপের খাদ্য ও শিকার
- নিশাচর সাপ হওয়ার ফলে এরা রাত্রের দিকেই শিকার ধরে।
- কালাচ সাপের খাদ্য সাধারনত অন্য ছোটো সাপ(কালাচ, ঘরচিতি),ইঁদুর, টিকটিকি এবং ব্যাঙ।
- কালাচ শিকার ধরার জন্য ইঁদুরের গর্ত, বাঁশঝাড়, ইঁটের পাঁজা ,ভাঙ্গা বাড়িতে ও মানুষের ঘরে আশ্রয় নেয়।
কামড় এবং বিষের ধরন
- কালাচ সাপ কামড় দিলে বিষ প্রয়োগ করবেই এবং সব চেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে এরা শত ভাগ বিষ প্রয়োগ করে।
- এই সাপের একটি কামড়ে ২০ মি.লি বিষ প্রয়োগ করে।
- কালাচ সাপের বিষ মূলত নিউরোটক্সিক।
- অন্যান্য বিষধর সাপ কামড় দিলে তার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ থাকে ড্রাইবাইট তবে কালাচ সাপের কামড়ে ড্রাইবাইট নেই বললেও ভুল হবেনা। ড্রাইবাইট হচ্ছে কামড় দেবে ঠিকই কিন্তু বিষ প্রয়োগ করবেনা।
- কালাচ সাপে কামড় দিলে মানুষ তা বুঝতেই পারেনা কারণ সাপটির দাঁত মশার হুলের মত তাই কামড়ে বেশিরভাগ সময় দাগ পড়েনা কোন রকম জ্বালা যন্ত্রণা হয় না, আক্রান্ত জায়গা ফুলেনা।
- ৯০% রোগী বুঝতেই পারেনা তাকে সাপে কামড়েছে।
কালাচ সাপ কামড়ানোর লক্ষণসমূহ
- কালাচ সাপ নিশাচর হওয়ায় সাধারণত রাতেই কামড়ায় এবং কামড়ানোর ঘন্টখানেক পর তলপেটে প্রচন্ড ব্যাথা হবে।
- সাপের বিষে প্যারালাইসিস হতে শুরু করে।
- রোগীর চোখের পাতা পড়ে আসে, বমি বমি ভাব হয়, জ্বর হলে যেমন অস্বস্তি হয় তেমনটা অনুভূত হয়।
- পাশাপাশি শরীরের গাঁটে গাঁটে ব্যাথা হয় এবং কথাও জড়িয়ে যায়।
- সময়ের সাথে সাথে রক্ত জমাট বাঁধা শুরু করে।
- এর বিষের নিউরোটক্সিন উপাদানটি মানুষের নার্ভ সিস্টেমকে এটাক করবে এবং সর্বশেষ রেসপিরেটরি ফেইলিউর ঘটাবে অর্থাৎ সাফোকেশন বা দমবন্ধ হয়ে নির্ঘাত মৃত্যু ঘটাবে।
- তাই এ অবস্থায় রোগীকে চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ বা জেলা সদরে নিতে হবে দ্রুত।
আরোও পড়ুনঃ বাংলাদেশে বেশী পাওয়া পদ্ম গোখরা
কালাচ সাপ কামড়ালে করনীয়
- কালাচ পৃথিবীর সবচেয়ে বিষধর সাপগুলার একটি তাই এই সাপের কামড়ের লক্ষণ বোঝামাত্রই যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল যেমন জেলা সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে হবে।
- সাপে কাটা ব্যক্তিকে স্বান্তনা দিতে হবে এবং তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে কারণ অনেকেই সাপে কাটার পর ভয়ে স্ট্রোক করে মারা যায়।
- রোগীকে ঘুমাতে দেওয়া যাবে না। সজাগ রাখতে হবে।
- আক্রান্ত স্হান নাড়াচাড়া করা যাবে না। নাড়াচাড়া করলে বিষ খুব দ্রুত দেহে ছড়িয়ে পড়বে এবং তাতে রোগী অনেক কম সময় পাবে।
- হাসপাতালে নিয়ে অ্যান্টিভেনম দিলেই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে।
- ক্ষতস্থানে চন্দ্রবোড়া বা গোখরো এর কামড়ের মতো জ্বালা যন্ত্রনা করেনা বলে অনেকেই চিকিৎসা করান না।
- উপরে উল্লেখ্য উপসর্গ গুলি অনুভব করলে বা সাপে কামড়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হলে সাথে সাথে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হসপিটালে যেতে হবে। যথা সময়ে চিকিৎসা হলে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রায় ১০০ শতাংশ ।
- সাপে কাটা ব্যক্তিকে কখনোই ওঝার কাছে নেওয়া যাবে না। ওঝারা কখনোই সাপের বিষ নামাতে পারে না।
- মুখ দিয়ে চুষে বা ক্ষতস্হান থেকে রক্ত বের করার মাধ্যমে সাপের বিষ বের করা সম্ভব না।
- রোগীকে ওঝার কাছে নিয়ে বা নিজে নিজে বিষ বের করার চেষ্টা করা মানে নিজের মৃত্যু নিজেই ডেকে আনা।
কালাচ বনাম ঘরগিন্নি/ঘরচিতি : কিভাবে চিনবেন


- কালাচের গায়ের রং চকচকে কালো, কখনো কুচকুচে কালো হলেও ঘরচিতির গায়ের রং তামাটে বা চকলেট কালারের হয়ে থাকে।
- কালাচ সাপের মাথা হাতের আঙুলের মতো আকৃতির হয় আর ঘরচিতির মাথা হয় চ্যাপ্টা ও ত্রিকোণাকৃতি।
- কালাচের চোখের মনি খুবই ছোট ঘরচিতির তুলনায়।
- কালাচের মাথা থেকে কিছুটা দুর থেকে সাদা ব্যান্ড মার্ক শুরু হয় কিন্তু ঘরচিতির মাথার উপর থেকেই সাদা ব্যান্ড মার্ক শুরু হয়।
- কালাচের ডোরা ব্রেসলেটের মত গোলাকার মাথার পরে পেটের দিকে এসে ডোরা ডাবল তবে ঘরচিতির ডোরা মেয়েদের চুলের বিনুনির মত যা সারা শরীরে একটি করেই থাকে।
- ঘরচিতির লেজ পর্যন্ত সাদা ব্যান্ড মার্ক থাকেনা, লেজের অনেক আগেই শেষ হয়ে যায় কিন্তু কালাচের লেজের শেষ পর্যন্ত সাদা ব্যান্ড মার্ক থাকে।
- কালাচ সাপের দেখা কম মিললেও ঘরচিতি সাপ সচরাচরই আমাদের বসবাসের জায়গায় দেখা যায়।
- কালাচ ও ঘরচিতি উভয় সাপই খাড়া উপর দিকে উঠতে পারে তাই কয়েকতালা উপরে বাসা হলেও এদের সমস্যা হয়না।
- কালাচ সাপ মারাত্নক বিষধর হলেও ঘরচিতি একটি শান্ত, নির্বিশ সাপ।
আরোও পড়ুনঃ ইয়েলো বেলিড সী স্নেক
কালাচ কেন একটি গুপ্তঘাতক সাপ
- কিছু সাপের ক্ষেত্রে কামড়ের ৪৮ ঘণ্টা অতিক্রম করে কিন্তু কোন সমস্যা হয়না তাহলে বুঝতে হবে আর কিছু হবার সম্ভাবনা নেই।
- এই হিসেব কেউটে বা কালাচ সাপের বেলায় মিলবেনা কারণ এই সাপের কামড়ে বিষক্রিয়া হবেই কেননা এদের ড্রাইবাইট (কামড় দেবে কিন্তু বিষ ছাড়বেনা) বলে কিছু নেই।
- Common Krait সাপের বিষ হচ্ছে Neurotoxic ধরনের যা হতে পারে নিশ্চিত মৃত্যুর কারণ । ৪-৮ ঘন্টার ভিতরে এন্টিভেনম দিতে না পারলে মৃত্যু অবধারিত।
- এই সাপের কামড়ের চিহ্নও দেখা বা বোঝা যায়না তাই সাপে কামড়িয়েছে নাকি অন্য কিছু তাও শনাক্ত করা যায়না আবার সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলেও মৃত্যু নিশ্চিত ,তাই কালাচ সাপকে গুপ্তঘাতক সাপ বলে।
সাপ দেখলে আমাদের করণীয়-
- একান্ত প্রয়োজন ও আক্রমণাত্মক প্রাণঘাতী বিষধর সাপ না হলে সাপ মারা থেকে বিরত থাকুন।
- সাপ বিষধর হোক বা নির্বিষ দেখলে চলে যেতে দিন ; এরা অত্যন্ত ভীত, নিরীহ ও দুর্বল প্রাণি ।
- পালানোর রাস্তা না পেলে তবেই এরা কামড়ায় তাই সাপকে তাড়িয়ে দিন বা দূরে সরে গিয়ে বন বিভাগের সহায়তা নিন কিন্তু মারতে যাওয়ার দরকার নেই যা হবে নিজের, সকল মানুষের ও প্রকৃতির প্রত্যেকটি প্রাণির জন্য মঙ্গল জনক।
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য সাপকে রক্ষা করতে এবং সাপের কামড় থেকে জীবন বাচাতে সচেতনতার বিকল্প নেই।
- প্রকৃতিতে অবিষধর অনেক সাপ আছে তাই বিষধর সাপ দরকার নেই এই টা ভুল ধারনা। দরকার না থাকলে তো বিষধর সাপ থাকতো না। বিষধর হোক আর নির্বিষ সব সাপই দরকার, সব প্রাণির দরকার পরোক্ষ হোক বা প্রত্যক্ষ।
- কালাচ সাপ কোথাও দেখতে পেলে আপনার পরিচিত রেসকিউয়ার কে খবর দিন বা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিন।
- কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়া নিজে নিজে সাপ ধরতে যাবেন না। মনে রাখবেন আপনার অসাবধানতায় এক ছোবলেই মৃত্যু হতে পারে।
- সাপ হত্যা করা উচিত নয় কেননা সাপ আমাদের ইকোসিস্টেমের জন্য অত্যন্ত দরকারি।
যেসব সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
- বাড়ির চারপাশের ঝোপঝাড় ও ঘর ইত্যাদি পরিষ্কার রাখতে হবে সম্ভব হলে ব্লিচিং দিয়ে পরিষ্কার করুন তাতে পোকামাকড়ও কম আসবে।
- উচ্ছিষ্ট খাবার ঘরের মধ্যে বা ঘরের কাছে ফেলা থেকে বিরত থাকুন,এর ফলে ইঁদুর ও পোকামাকড় আসবেনা এবং সাপ আসবার সম্ভাবনা ও কমবে।
- রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে নিতে হবে।
- যাদের মাটির বাড়ি তারা মেঝেতে শোবেন না , অন্তত খাঁটিয়া বা মাচা জাতীয় কিছুতে ঘুমবেন, মশারি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
- রাতে চলাচল করলে টর্চলাইট ব্যাবহার করতে হবে।সাপ দেখলে মারতে না গিয়ে তাকে নিজের মত চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
- যতটা সম্ভব সাপের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন ও সতর্ক থাকুন এদের মারতে যাবেন না তাহলে বিপদ বাড়বে ।পরিবেশ বাঁচার অধিকার সবার আছে! শুধু মানুষের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি।
আরোও পড়ুনঃ পদ্ম গোখরা সাপ বিষয়ে জানুন

কালাচ সাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
- কালাচ সাপ নিশাচর। গভীর রাতে এরা বিচরণ করে। এরা খাড়া ভাবে উপরে উঠতে পারে। এবং উপরে উঠে মানুষের বিছানায় চলে যায়।
- কালাচ সাপের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর দিক হচ্ছে এরা শত ভাগ বিষ প্রয়োগ করে। কালাচের কামড়ে কোন ড্রাইবাইট নেই। সে কামড় দেওয়া মানেই বিষ প্রয়োগ হবে।
- কালাচ সাপে কামড় দিলে মানুষ তা বুঝতেই পারেনা কারণ সাপটির দাঁত মশার হুলের মত তাই কামড়ে বেশিরভাগ সময় দাগ পড়েনা কোন রকম জ্বালা যন্ত্রণা হয় না, আক্রান্ত জায়গা ফুলেনা।
- কালাচ সাপের একটি কামড়ে ২০ মি.লি বিষ শরীরে প্রবেশ করে। এর বিষ নিউরোটক্সিন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে মৃত্যু নিশ্চিত।
- এই সাপের নিউরোটক্সিক বিষ আপনার নার্ভ সিস্টেমকে এটাক করবে এবং শেষমেষ রেসপিরেটরি ফেইলিউর অর্থাৎ সাফোকেশন বা দমবন্ধ হয়ে নির্ঘাত মৃত্যু ঘটাবে। ৪-৮ ঘন্টার ভিতরে এন্টিভেনম দিতে না পারলে মৃত্যু অবধারিত।
আরোও পড়ুনঃ মারাত্মক বিষধর রাসেল’স ভাইপার সম্পর্কে জানুন
কালাচ সাপ সম্পর্কে জনপ্রিয় কিছু ভুল ধারনা
- প্রচলিত আছে এই সাপ ঘুমন্ত মানুষের বিছানায় উঠে আসে ঘামের গন্ধ নিতে। তবে এর পক্ষে-বিপক্ষে অনেক নানা মত থাকলেও বৈজ্ঞানিকভাবে সাপের ঘ্রাণ শক্তি আছে বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
- কামড়ানোর ১ ঘন্টার মধ্যে ভ্যাক্সিন না দিলে পরে আর কাজ করে না এটা একদমই সত্য নয় |
- কামড় দিলেই মৃত্যু এমন নেতিবাচক ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে এটাও ঠিক নয়।
- কালাচ ইচ্ছা করেই মানুষ কে কামড়ায় এটিও সত্যি নয় | কোন সাপই মানুষ কে ইচ্ছা করে কামড়ায় না |
কালাচ – FAQ’s
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ আর কি কি নামে পরিচিত?
উত্তর- কালচিতি,ডোমনাচিতি
প্রশ্নঃ কালাচ সাপের ইংরেজি নাম কি?
উত্তরঃ Common krait.
প্রশ্নঃ কালাচ সাপের বৈজ্ঞানিক নাম কি?
উত্তর – Bungarus caeruleus
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ কেমন স্থানে থাকে?
উত্তর- ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে, শিকারের কাছাকাছি।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ কেমন স্বভাবের?
উত্তর- নিশাচর।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপের বিষের ধরণ কি?
উত্তর- নিউরোটক্সিক।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ প্রতি কামড়ে কতটুকু বিষ প্রয়োগ করে?
উত্তরঃ কালাচ সাপ প্রতি কামড়ে শতভাগ বিষ প্রয়োগ করে যা প্রায় ২০ মি.লি.
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ কামড়ানোর কতক্ষণ পর মারা যায়?
উত্তর- চিকিৎসা না হলে ৪-৮ ঘন্টার মাঝে মারা যাবে।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ কামড়ের উপসর্গ কি?
উত্তর-পেটে ব্যথা, চোখের পাতা পড়ে আসছে, শ্বাসকষ্ট কালাচের দংশনের উপসর্গ।
প্রশ্নঃ কালাচ কি মানুষের বিছানায় আশ্রয় নেয়? কেন?
উত্তর- হ্যা নেয়।অনেকর মতে মানুষের ঘামের গন্ধ নেয়ার জন্য যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে অপ্রমাণিত।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপ কি খাড়াভাবে উপরে উঠতে পারে?
উত্তর- হ্যা পারে।
প্রশ্নঃ কালাচ সাপের কি কোনো ড্রাইবাইট আছে?
উত্তরঃ না নেই
রেফারেন্স
আরোও পড়ুন